মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সামিরা খান মাহির কাজিন আবু সাহেদ রাসেল। শনিবার (২৮ জুন) রাতে ফেনী থেকে ঢাকা ফেরার পথে কুমিল্লার ময়নামতি এলাকায় ঘটে এই দুর্ঘটনা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, রাসেলকে বহনকারী গাড়িটিকে পেছন থেকে একটি বড় গাড়ি সজোরে ধাক্কা দেয়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তার গাড়িটি পাশের একটি বড় পুকুরে পড়ে যায়। পানিতে ডুবে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করতে ছুটে আসেন কাছাকাছি থাকা বাইক আরোহীরা। তারাই গুরুতর আহত অবস্থায় রাসেলকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে আরেকটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
মাহির কণ্ঠে শোক আর হতাশা:
ঘটনার দুইদিন পর সোমবার (৩০ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে ভাইয়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি প্রকাশ করেন মাহি। লেখেন, ‘আমার ভাইটা চলে গেল।’ এরপর হৃদয়বিদারক ইমোজি যোগ করে তিনি লেখেন, ‘ওকে মেরে ফেলল। আর আমরা কিছুই করতে পারলাম না।’
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কান্না জড়িত কণ্ঠে মাহি জানান, ‘রাসেল আমাদের বাসাতেই থাকত। দুই দিনের জন্য ফেনী গিয়েছিল বন্ধুর বিয়েতে। ফেরার সময় কুমিল্লার ময়নামতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে ওর গাড়িকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে বড় একটি গাড়ি পুকুরে ফেলে দেয়। দুর্ঘটনার সময় আশপাশে আর কোনো গাড়ি ছিল না, শুধু একটি বাইক ছিল। বাইক আরোহীরাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।’
‘হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইন্টারনাল ব্লিডিংয়ের কারণে ওর মৃত্যু হয়েছে। অক্সিজেন দেয়া হলেও নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। তারা আর কিছু করতে পারেননি,’ বলেন মাহি।
দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখছেন না মাহি। তার মনে সন্দেহ—রাসেলকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘কোন গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে, সেটি জানা নেই। পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে গেছে। আর দাফনও হয়ে গেছে। পোস্টমর্টেম ছাড়া তো মামলা সম্ভব না। আমরা চেয়েছি, ওর শান্তিতে ঘুমানো হোক।’
মৃত্যুসংবাদের প্রথম সূত্র ছিল মাহির বাগদত্তা সাদাত শাফি নাবিলের ভিজিটিং কার্ড। রাসেলের সঙ্গে থাকা ওই কার্ড থেকেই উদ্ধারকারীরা যোগাযোগ করেন এবং ফোনে তার মৃত্যুর খবর দেন পরিবারকে।
ঘটনাটি এখনো পরিবার ও স্বজনদের মনে গভীর শোক আর অনিশ্চয়তার ছাপ ফেলে গেছে।