‘আত্মহত্যার আগে বেগুনি-মুড়ি দিয়ে ইফতার করে কিছুক্ষণ তানপুরা দিয়ে রেয়াজও করেন সাদী মোহাম্মদ’

হঠাৎ করেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সাদী মোহাম্মদ। বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় নিজ ঘর থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। সাদী মহম্মদের ছোট ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ নিজেই সাদীর ঘরের দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।

দ্রুত তাকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শিবলী মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পাই। তার গলায় দাগ ছিল। অনুমান করা যায় তিনি কোনো কিছুর সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন।’

সাদী মোহাম্মদের ব্যক্তিগত সহকারী সোহেল মাহমুদ জানান, বুধবার সন্ধ্যায় বেগুনি ও মুড়ি দিয়ে ইফতারি শেষে নিজ রুমে যান শিল্পী। বেশ কিছুক্ষণ রেয়াজ করেন তানপুরা দিয়ে। এরপর অনেকসময় চুপচাপ থাকায় রুমে ঢুকতে গিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ। ডাকাডাকিতে সাড়া মিলছিলো না। পরে দরজা ভেঙে ঢুকে পরিবারের সদস্যরা দেখেন ঝুলন্ত অবস্থায় শিল্পীর নিথর দেহ।

সাদী মোহাম্মদ রবীন্দ্রসঙ্গীতের ওপর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। ২০০৭ সালে ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার ‘শ্রাবণ আকাশে’ ও ২০১২ সালে তার ‘সার্থক জনম আমার’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।

তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক ছিলেন। ২০১২ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করে চ্যানেল আই। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমী তাকে রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তার বাবা সলিমউল্লাহকে হত্যা করে। তার বাবার নামে ঢাকার মোহাম্মদপুরের সলিমউল্লাহ রোডের নামকরণ করা হয়েছে। সাদির ভাই শিবলী মোহাম্মদ বাংলাদেশের একজন নৃত্যশিল্পী।