জেমসের রকশোতে কাঁপল টাঙ্গাইল

রকসংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি নগর বাউল জেমসের কণ্ঠে গাওয়া ‘কবিতা, তুমি স্বপ্নচারিণী হয়ে খবর নিও না’, ‘দিওয়ানা দিওয়ানা তোমার প্রেমের দিওয়ানা’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কি দিয়া’, ‘দশ মাস দশ দিন ধরে গর্ভে ধারণ’, ‘আসবার কালে আসলাম একা’, ‘দুষ্ট ছেলের দল’, ‘বিজলী চলে যেওনা’, ‘মীরা বাঈ’, ‘পাগলা হাওয়ার তোড়ে’, ‘না জানি কোহি’সহ একের পর এক জনপ্রিয় গান মাতিয়ে তোলে টাঙ্গাইল শহিদ মারুফ স্টেডিয়াম।

মঙ্গলবার রাতে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ (বিবিএফসি) উপলক্ষে আয়োজিত ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে লক্ষাধিক দর্শককে মুগ্ধ করেন এই রকস্টার।

গানের সঙ্গে দর্শক-শ্রোতারাও মেতে ওঠেন উচ্ছ্বাসে। অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় এক জমকালো কনসার্টে, যেখানে জেমস ছাড়াও পারফর্ম করেন টাঙ্গাইলের বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্যান্ডশিল্পীরা। বিকেল থেকে শুরু হওয়া কনসার্ট চলে রাত অবধি।

দুপুর থেকেই টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলা এবং আশপাশের জেলা থেকে জেমসের ভক্তরা স্টেডিয়ামে ভিড় করতে থাকেন। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করা হয়েছে।

সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়ারম্যান সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানবীর আহমেদ বলেন, “মঞ্চে জেমস মানেই অন্যরকম এক উন্মাদনা। দর্শকদের উল্লাসে মেতে উঠেছিলেন তিনিও।”

আকুর-টাকুরপাড়ার ষাটোর্ধ্ব বাসিন্দা আজগর আলী জানান, “টাঙ্গাইলে এর আগে এত বিশাল দর্শকসংখ্যার কোনো অনুষ্ঠান হয়নি। স্টেডিয়াম ও আশপাশের এলাকায় ছিল তিলধারণের জায়গা নেই।”

কলেজছাত্রী সুমাইয়া রহমান বলেন, “অনুষ্ঠানে পৌঁছাতে অনেক কষ্ট হয়েছে, তবে গুরু জেমসের গান শুনে সব কষ্ট ভুলে গেছি। তিনি টাঙ্গাইলে এক নতুন ইতিহাস গড়লেন।”

চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়ারম্যান সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় দেশীয় শিল্পীদের মঞ্চে তুলে ধরার জন্য আমরা বিভিন্ন আয়োজন করছি। সবার আগে বাংলাদেশ—এই মূলমন্ত্রে আমরা এগিয়ে চলছি।”

তিনি আরও বলেন, “১৭ বছর পর দেশে ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটেছে। ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই মিলে মাদক, সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাংমুক্ত একটি আদর্শ টাঙ্গাইল গড়তে চাই।”

টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানভীর আহমেদ জানান, “অনুষ্ঠানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়েছে।”