শারীরিক অসুস্থতা যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না লালনসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীনকে। বছরের শুরুতেই একবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলেও মাঝেমধ্যেই তাঁর শারীরিক জটিলতা দেখা দিচ্ছে।
সম্প্রতি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে তিন দিন আগে তাঁকে আবারও রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি করার পর প্রথমে তাঁকে রাখা হয় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। সেখানে পর্যবেক্ষণের পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে গতকাল রোববার তাঁকে স্থানান্তর করা হয়েছে সাধারণ কেবিনে।
আজ সোমবার সকালে ফরিদা পারভীনের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার স্বামী ও যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিম।
তিনি বলেন, ফরিদা পারভীনের অবস্থা কিছুটা ভালো। তাই কেবিনে দেওয়া হয়েছে। ফরিদা পারভীনের সার্বিক শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে গাজী আবদুল হাকিম বলেন, ‘সার্বিকভাবে তার অবস্থা খুব একটা ভালো না। গত কয়েক মাসে তিনবার আইসিইউতে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। ফুসফুস আর কিডনিজনিত নানা সমস্যায় ভুগছে সে। শরীর এখন প্রচণ্ড দুর্বল। উঠে দাঁড়ানোর মতো শক্তি পায় না। হাঁটতেও পারে না। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত গাইতে শুরু করেন ফরিদা। ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে ফরিদা পারভীন লালনসংগীতে তালিম নেন।
ফরিদা পারভীন ১৯৮৭ সালে সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পান। এ ছাড়া ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। সেরা প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে।
শিশুদের লালনসংগীত শিক্ষার জন্য ‘অচিন পাখি স্কুল’ নামে একটি গানের স্কুল গড়ে তুলেছেন তিনি।