‘শামীমকে জুতা দিয়ে পিটাইতে চাইছিলাম’

দেশের শোবিজ অঙ্গনে হঠাৎ করেই বিতর্কের ঝড়। ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা শামীম হাসান সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন তার সহকর্মী অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা।

তিনি দাবি করেছেন, শুটিং সেটে শামীম তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করারও চেষ্টা করেছেন। আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করে প্রিয়াঙ্কা বলেন, শামীম মাদক সেবন করে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন এবং প্রকাশ্যেই তাকে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন।

এই অভিযোগের রেশ না কাটতেই আরেক অভিনেত্রী, বাচিক শিল্পী ও উপস্থাপক সিফাত বন্যাও সামাজিক মাধ্যমে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে শামীম হাসান সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি তাকে ‘ভাঁড়’ বলে উল্লেখ করে লেখেন, “গতকাল একজন অভিনেত্রীকে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে শামীম। সেটের ডিরেক্টরসহ সবাই চুপ ছিল! এটাই এই শিল্প অঙ্গনের বাস্তবতা।”

সিফাত তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও শেয়ার করেন। তিনি জানান, দুই বছর আগে উত্তরার একটি শুটিং হাউজে শামীমের সঙ্গে প্রথম কাজের সময় তিনি গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। সেই অবস্থায়ও শামীমের অসংবেদনশীল এবং অভদ্র আচরণ তাকে স্তম্ভিত করে। তিনি জানান, শুটিং সেটে এসি কমানোর অনুরোধ করায় শামীম তীব্র ভাষায় তাকে অপমান করেন এবং মেকআপ রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে, ডিরেক্টর এবং এডি এসে দুইজনকে আলাদা রুমে নিয়ে যান।

সিফাত বলেন, “আমি অপমানিত বোধ করছিলাম। একজন নারী সহকর্মী হিসেবে সে যেভাবে আচরণ করেছে তা আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারিনি। তাই শুটিং শেষ হওয়ার পরদিন তাকে ফোন করে বলেছিলাম আমি তাকে জুতা দিয়ে পেটাতে চাই।”

তিনি আরও বলেন, শামীমের মতো ‘অভদ্র, গাঁজাখোর এবং ধর্ষক মানসিকতার’ মানুষকে বয়কট করা উচিত এবং কোনো নারী অভিনেত্রী যেন তার সঙ্গে কাজ না করেন—এটাই তার প্রত্যাশা।

এই ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ সিফাত ও প্রিয়াঙ্কার পাশে দাঁড়িয়েছেন, কেউ আবার সমালোচনা করেছেন। অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করে সিফাতের বক্তব্যকে ‘আঁতলামো’ আখ্যা দিয়ে শামীমের পক্ষ নিয়েছেন। তার দাবি, শামীম একজন সৎ মানুষ এবং এই ধরনের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আগেও তোলা হয়েছে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই তিনি মনে করেন।

সম্প্রতি এই অভিযোগগুলো শোবিজ অঙ্গনে নতুন করে নারীর নিরাপত্তা, সহকর্মীদের সম্মান এবং পেশাগত পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এখন দেখার বিষয়, সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো কী পদক্ষেপ নেয় এবং কীভাবে এই অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.