বদলে যাবে মধুমিতা, হবে ‘মধুমিতা লাউঞ্জ’

ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল মধুমিতা এবার নতুন রূপে আসছে। নাম কিছুটা পরিবর্তন হয়ে হবে ‘মধুমিতা লাউঞ্জ’।

তারকা সংবাদকে এমনটাই জানালেন হলটির মালিক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ।

ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ

তিনি তারকা সংবাদকে বলেন, ‘এ হল আমাদের বাবা মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ ব্যবসা আমাদের পারিবারিক। আমাদের রক্তে মিশে গেছে সিনেমা। কিছুদিন আগে আমরা সব ভাই মিলে মিটিংয়ে বসেছিলাম। সেখানে সবাই বলে সিনেমার বর্তমান যে অবস্থা তাতে হয় হল বন্ধ করে দিতে হবে না হয় নতুন বিনিয়োগ করে আধুনিক রূপ দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আমরা নতুন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিই।’

‘মধুমিতা’র প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন

‘বর্তমানে দর্শকদের রুচি বদলেছে। তারা দেশ-বিদেশের সকল সিনেমাই দেখে। সিনেপ্লেক্সগুলোতে তারা প্রচুর হলিউডের সিনেমা দেখে। আমাদের হলেও একসময় ৭০ মি.মি. পর্দায় বিশ্বের বিখ্যাত বিভিন্ন সিনেমা দেখানো হয়েছে। আমরা মূলত এর জন্যই বিখ্যাত ছিলাম। এবং তাতেই আবার ফিরে যাবো।’

তাহলে কি মধুমিতা আর দেশি সিনেমা প্রদর্শন করবে না? ‘না না, তা হবে কেন? করব, তবে এখানকার মত সব না দেখিয়ে ভালো মানসম্পন্ন বাংলা সিনেমা দেখাবো।’

আগের মত কলকাতার বা বলিউডের সিনেমা আমদানির ঝামেলায় তারা আপাতত যাবেন না বলে জানালেন।

বদলে যাওয়া মধুমিতায় আসন সংখ্যা ১২০০ থেকে কমে গিয়ে হবে ৮০০। এর মধ্যে নিচতলায় ৫০০ এবং দোতলায় ২৮০ এর মত। টিকেটের দাম হবে ১৫০ ও ৩০০ টাকা।

একই সাথে থাকবে সুপরিসর ওয়েটিং রুম, রেস্টুরেন্ট। হলে বসানো হবে নতুন পর্দা, যার দাম পড়বে ২০ লাখের মত। থাকবে টু কে রেজুলেশনের প্রজেক্টর ও ডলবি এটম সাউন্ড সিস্টেম।

হল কর্তৃপক্ষ এর আগে বলে আসছিল, তারা একাধিক স্ক্রিনের সিনেপ্লেক্স করবেন। তাহলে কি সে পরিকল্পনা থেকে সরে আসলেন?

‘না সরে আসিনি। নতুন স্ক্রিন থেকে আয়ে যদি লাভ হয়, তা দিয়ে আমরা আরেকটা স্ক্রিন বাড়াবো।’

নওশাদ বলেন, ‘তিন বিঘা জমির উপর আমাদের হলটি। যার ফলে আমাদের এটি সম্প্রসারণ করতে সমস্যা হবে না।’

পুরো প্রজেক্টটির বাজেট ধরা হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। ২-৩ শতাংশ সুদে সরকার থেকে ঋণের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে এ নিয়ে কথা হচ্ছে বলে জানালেন নওশাদ।

‘না হলে ব্যাংক থেকে যেন স্বল্প সুদে মধুমিতাসহ দেশের বড় বড় সিনেমা হল রয়েছে তাদের ঋণের ব্যবস্থা করা হয়, এ দাবি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’

ঋণ বা বিনিয়োগ নিশ্চিত হলে এ ঈদের পর থেকে পুরোপুরি কাজ শুরু হবে। তবে ইতোমধ্যে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে গেছে। মধুমিতা সিনেমা হলের নামে একটি ওয়েবসাইট (www.modhumita.com) চালু করা হয়েছে। যেখান থেকে ভবিষ্যতে দর্শকরা টিকেট কাটতে পারবে।

সব মিলিয়ে কাজ ঠিকঠাক এগোলে এ বছরের ৩ ডিসেম্বর হলটির ৫৩ বছর পূর্তিতে ‘মধুমিতা লাউঞ্জে’ দর্শকরা সিনেমা দেখতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.