‘আমি চাইবো সিয়ামের সাথে একটা ছবি করতে’

একান্ত সাক্ষাতকারে টয়া

মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া—  ২০১০ সালে লাক্সে শীর্ষ পাঁচে ছিলেন। গত আট বছরে অসংখ্য নাটক, বিজ্ঞাপন ও মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেছেন। ২০ জুলাই, শুক্রবার তার প্রথম সিনেমা ‘বেঙ্গলি বিউটি’ মুক্তি পাবে। সিনেমাটির পরিচালক রাশান নূর তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন। সিনেমাটি ও তার সামনের কাজগুলো নিয়ে কথা বলেছেন তারকা সংবাদ-এর সাথে। সাক্ষাতকার নিয়েছেন আহমেদ জামান শিমুল।

‘বেঙ্গলি বিউটি’তে আপনার অভিনীত চরিত্র সম্পর্কে জানতে চাই।

আমি একজন মেডিক্যাল ছাত্রী। এর আগে আমি টাইম-পিরিয়ডটা বলি— এটা ১৯৭০-৭২ সালের গল্প। সে সময়ে আমাদের রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটু ভিন্ন ছিল। ওইরকম একটা সময়ে ভালোবাসার গল্প কিভাবে এগোয় তা নিয়ে ‘বেঙ্গলি বিউটি’।

সিনেমাটাতে যখন নিজের মধ্যে থাকি, সামনে কেউ থাকে না, দুনিয়াটা বিশাল। মেয়েটা অনেককিছু ভালোবাসে, নিজেকে অন্যভাবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করে। কিন্তু যখনই সে বাস্তবের দুনিয়ায় আসে তখন তার সামনে বাবা-মা আসে, সে কিছুই বলতে পারে না। খুবই ইন্ট্রোভাট। পার্সোনাল লাইফে আমি টয়া, মনে মনে যা ভাবি তা আমার ফেইসে কিংবা অভিব্যক্তিতে ফুটে উঠে। কিন্তু সিনেমাটাতে মেয়েটা যখন নিজের মধ্যে থাকে তখন অনেককিছু ভাবলেও বাবা-মা কিংবা বড়রা সামনে আসলে কিছু বলতে পারে না।

চরিত্রটির জন্য আপনার কী ধরনের প্রস্তুতি ছিল?

শুটিংয়ে যাবার পাঁচমাস আগে স্ক্রিপ্টটা হাতে পেয়েছিলাম। এ সময়ে পরিচালকের সাথে আমার স্ক্রিপ্ট রিহার্সেল হয়েছে, কস্টিউম রিহার্সেল হয়েছে। এরপর তিনি আমাকে এসাইনমেন্ট দেন—কিছু ডকুমেন্টারি ও মুভি দেখার। সেগুলো আমি দেখেছি। ড্রেস রিহার্সেলের সাথে আমাদের এক্টিং রিহার্সেল হয়েছে—কিভাবে কথা বলব, চলাফেরা, হাঁটা চলা, খাবার-দাবার, কিভাবে দৌড়াব ইত্যাদি। এভাবে চারমাস প্র্যাকটিসের মধ্যে ছিলাম, তারপর শুটিংয়ে গিয়েছি।

শুটিংটা কখন হয়েছিল, কোথায় হয়েছিল?

২০১৭ সালের পুরো মে মাস জুড়ে। ঢাকা, ঢাকার বাইরে কালিগঞ্জে, মানিকগঞ্জে শুটিং করেছি। ঢাকাতে উত্তরা, বনানীতে কাজ করেছি। ইন্টেরিয়র, এক্সটেরিয়রে অনেক কাজ করতে হয়েছিল। ৭০ দশকের ফিলটা আনতে কষ্ট করতে হয়েছে। আমাদের কস্টিউম, হেয়ার এন্ড মেকআপ দিয়ে সে সময়ের ফ্লেভারটা আনার চেষ্টা করেছি।

মিডিয়াতে অনেকবছর আছেন, নিশ্চয় বেশ কয়েকবার সিনেমা করার অফার পেয়েছেন। কিন্তু ‘বেঙ্গলি বিউটি’ দিয়ে সিনেমার ক্যারিয়ার শুরু করার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন?

প্রত্যেকটা জিনিসে একটা ম্যাজিক থাকে। এ গল্পটার মধ্যে একটা ম্যাজিক আছে। চরিত্রটার মধ্যে ম্যাজিক আছে। আমার কাছে মনে হয়েছে যদি সিনেমাটিতে কাজ না করি তাহলে আমি জিনিসটাকে মিস করব। হয়ত রিগ্রেট করতে পারি কেন এটা করিনি।

শুটিং চলাকালীন সময়কার কোন অভিজ্ঞতা যদি শেয়ার করতেন।

আমার যে নায়ক রাশান নূর উনিই এ ছবির পরিচালক। ওনার ওয়ে অব ডিরেকশন ভিন্ন। উনি বড় হয়েছেন আমেরিকায়— মেকিং হলিউড ধরনের। বাংলাদেশে তো আমাদের কালচার ভিন্ন, একটা মিশ্রণ পাবেন। মজার একটা টুইস্ট এখানে পাবেন— হলিউডের ফ্লেভার, বাংলাদেশের ফ্লেভার, সবকিছু মিলিয়ে ভিন্ন ফ্লেভারের একটা মুভি সবাই পাবেন।

শুটিং চলাকালীন সময়ে আমরা প্রি-সাইজ একটা শিডিউলের মধ্যে কাজ করতাম— ছয়দিন শুটিং করব, একদিন বিশ্রাম করব, এরকম। সকাল ছয়টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা সাতটায় শেষ করতাম। আবার যেদিন রাতে কাজ থাকত, সেদিন সন্ধ্যা ছয়টায় শুরু করে পরদিন ভোর চারটা-পাঁচটায় শেষ করতাম।

সিনেমাটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী?

প্রত্যাশা সবাই সিনেমাটি দেখবেন। আমি আগে থেকে বলে আসছি, এটি একটি হিস্ট্রোরিক্যাল স্টোরি। ওইসময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে একটা রোমান্টিক গল্প কিভাবে এগোবে তা নিয়ে সবার মধ্যে একটা আগ্রহ থাকবে। আমার মনে হয় সবার ভালো লাগবে।

সামনে আপনি নতুন কোন সিনেমায় কাজ করছেন কিনা? কাজ করলে কী ধরনের গল্পকে প্রাধান্য দিবেন? আলাদা কোন পছন্দ আছে কি?

স্পেশাল পছন্দ বলতে, পরিপূর্ণ কর্মাশিয়াল ছবির জন্য নিজেকে সেভাবে যোগ্য মনে করি না।  গল্পনির্ভর সিনেমা, যেখানে আমার অনেক রোল প্লে করার সুযোগ থাকবে, একজনের উপর নির্ভর গল্প না— সেরকম হলে অবশ্যই আমি কাজ করবো।

শুধু ‘বেঙ্গলি বিউটি’ না আমার অনেকগুলো কাজ পাইপলাইনে আছে।  ‘লোকাল বাস’র কম্পোজার প্রতীমের সাথে আমার মিউজিক ভিডিও ‘গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে’ আসবে। সেখানে ওর বড় ভাই প্রতীকও কাজ করেছে। ওদের আগের গান ‘বেয়াইনসাব’ অনেক হিট ছিল। এ গানটা নিয়েও আমাদের প্রত্যাশা অনেক, এটাও হিট করবে। অলরেডি গানটার অডিও রিলিজ হয়েছে (জিপি মিউজিকে), সবাই অনেক পছন্দ করেছে।

এছাড়া ইমরানের সাথে রোমান্টিক মিউজিক ভিডিওতে কাজ করতে যাচ্ছি। ইমরানের বিশাল ফ্যান-ফলোয়ার আছে,  যেখানে আমার কাজ কখনও যায়নি। এটার নাম হচ্ছে ‘প্রেমের ক্ষয়’।  কোরবানির ঈদে এখন পর্যন্ত ৩টা নাটক কনফার্ম হয়েছে। 

সর্বশেষ প্রশ্ন, যদি কর্মাশিয়াল সিনেমায় ডাক পড়ে তাহলে নায়ক হিসেবে কাকে চাইবেন?

এখন তো নায়ক হিসেবে সবাই শাকিব খান, আরিফিন শুভ ওনাদের চান— আমিও চাইবো। কিন্তু যেহেতু সিয়াম আমার ভালো একটা বন্ধু, ওর ‘পোড়ামন ২’ সফল হয়েছে—আমি চাইবো সিয়ামের সাথে একটা ছবি করতে। আমার মনে হয় যদি একসাথে কাজ করি, তাহলে দর্শকদের ভালো কিছু উপহার দিতে পারব।