তিশাকে নিয়ে ফারুকীর আবেগঘন পোস্ট

সদ্য বাবা হয়েছেন মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী ।  এ নিয়ে বাধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস গোটা ফারুকী পরিবারে । সেই সাথে তিশাকে নিয়ে এক আবেগঘন বার্তাও লিখেছেন তার ফেসবুক একাউন্টে ।

তিশার প্রতি কৃতজ্ঞ ফারুকি লেখেন “তিশা যেদিন জানতে পারে ও কনসিভ করেছে তার কয়দিন পরেই ওর কাছে কল আসে বিশাল ভরদ্বাজের কাস্টিং ডিরেক্টরের কাছ থেকে। ঐ ছবিটার জন্যে যেটা নিয়ে পরে তারা আরো বেশ কিছু বাংলাদেশী অভিনেত্রীর সাথে কথা বলেছে, এবং যেটা নিয়ে নানা নিউজও হয়েছে। যাই হোক উনি জানান যে তিশাকে কাস্ট করতে চায় তারা। শুটিংয়ের সময় জানিয়ে দিয়ে তারা জানায় তিশা আগ্রহী হলে তারা পরবর্তী বিষয়গুলো ঠিক করবে।

তিশা স্কুল জীবন থেকে কাজ করছে। আগাগোড়া কাজ অন্তপ্রাণ একজন মানুষ কিভাবে এই বিষয়টাকে ডিল করে সেটা নিয়ে আমি ভাবতেছিলাম। কিন্তু তিশার যে কোনো সিদ্ধান্ত যেহেতু ও স্বাধীনভাবেই নেয়, আমি ওর সাথে এটা নিয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু বলছিলাম না। আমি দেখলাম ও বেশ শান্ত ভাবে দ্বিতীয় দিন কাস্টিং ডিরেক্টরকে বুঝিয়ে বলে যে, সে কাজটা করতে পারছে না কারণ এই মুহুর্তে ও কোথাও মুভ করতে চাচ্ছে না, এই মুহুর্তে সে একটু নিরিবিলি থাকতে চায় কারন সে কনসিভ করেছে। কোন রকম দোটান ছাড়াই ও ছেড়ে দেয় ঐ সুযোগটা।

ঐ যে শুরু, তারপর দেখে আসছি একের পর এক তিশাকে ছেড়ে দিতে হয়েছে ঘুম, পছন্দের খাওয়া, নিজের জন্য রাখা সময়। আমি মোটামুটি চেষ্টা করি সব সময়ই তিশার পাশে থাকতে হেল্পিং হ্যান্ড হিসাবে। ইলহামকে হয়তো গোসল করাচ্ছে, ডায়াপার চেন্জ করছে, আমি জিনিসপত্র আগাইয়া দিলাম, কখনো নিজেই করলাম। বা ধরা যাক ও ডাবিংয়ে গেলো, আমি বেবি সিটার হিসাবে ওর সাথে গিয়ে বসে থাকলাম দুরে কোথাও। কিন্তু একজন মাকে সন্তানের জন্য যা যা করতে হয়, যা যা জীবন থেকে ছাড়তে হয়, বাবারা চব্বিশ ঘন্টা সময় দিলেও মায়ের যে স্ট্রেস, যে কন্ট্রিবিউশন তার ধারে কাছেও যাইতে পারবে না।

এই কথাগুলা আমরা সবাই জানি। আমিও জানতাম, থিওরেটিক্যালি। কথাগুলোর অর্থ কি সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি বাবা হওয়ার পর, বাবা হয়ে সন্তানের মায়ের পাশে থাকার পর।

আমি কখনো এই সব নানাবিধ দিবস টিবস পালন করি না। কিন্তু এবারের মা দিবসের উসিলাটা কাজে লাগাইয়া আমি তিশাকে এই কথাগুলা বলতে চাইছি। ডুব ছবিতে একটা সিন আছে না, সাবেরি মাকে সামনাসামনি ধন্যবাদ দিতে পারে না দেখে একটু আড়ালে গিয়ে ফোন দিয়ে বলে? আমার অবস্থাও সেইরকম। মধ্যবিত্ত আড়ষ্টতায় সামনাসামনি ধন্যবাদ দিতে না পারার কারনে ফেসবুকে লিখে দিচ্ছি। লিখতে গিয়ে হচ্ছে আরেক বিপদ। একটু পর পর তিশা এসে বসে পাশে, কখনো ইলহাম খেলা করতে চায়। ফলে গতকাল শুরু করা লেখাটা আজকে এসে শেষ হইলো। বিলম্বিত মা দিবসের শুভেচ্ছার এই হেতু।”

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.