সঞ্জীব চৌধুরীর জন্মদিন

আজ প্রখ্যাত সংবাদিক, সংগীতশিল্পী সঞ্জীব চৌধুরীর জন্মদিন। তিনি বিখ্যাত ব্যান্ড ‘দলছুট’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অসংখ্য গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন।

২৫ ডিসেম্বর ১৯৬৪ সালে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গোপাল চৌধুরী ও প্রভাষিনী চৌধুরীর নয় সন্তানের মধ্যে সপ্তম।

‘আমি তোমাকেই বলে দেবো’, ‘সাদা ময়লা রঙ্গিলা পালে’, ‘হাতের উপর হাতের পরশ’, ‘চোখটা এত পোড়ায় কেন’, ‘বায়োস্কোপ’, ‘তোমার ভাঁজ খোল আনন্দ দেখাও’ এবং ‘গাড়ি চলে না’সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা সঞ্জীব চৌধুরীর।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালিন সময়ই ‘শঙ্খচিল’ নামের একটি গানের দলে সংগীত চর্চা শুরু করেন সঞ্জীব। ১৯৯৬ সালে তিনি এবং বাপ্পা মজুমদার মিলে প্রতিষ্ঠা করেন জনপ্রিয় সংগীত ব্যান্ড ‘দলছুট’। ‘দলছুট’ এ তার ও বাপ্পার যৌথ প্রয়াসে যে সকল গানের জন্ম, এ প্রজন্মের নবীনদের জন্য তা আজও অনুপ্রেরণা উৎস। সঞ্জীব দলছুটের চারটি অ্যালবামে কাজ করার পাশাপাশি অনেক গান রচনা ও সুরারোপও করেছেন।

তার প্রকাশিত অ্যালবাম গুলো হচ্ছে—আহ্ (১৯৯৭), হৃদয়পুর (২০০০), আকাশচুরি(২০০২), জোছনাবিহার (২০০৭) ও স্বপ্নবাজী।

শুধু সংগীতশিল্পীই নয়, তিনি একাধারে ছিলেন কবি, গীতিকার, সুরকার এবং একজন খ্যাতিমান সাংবাদিক। ছাত্রাবস্থাতেই প্রচণ্ড মেধাবী সঞ্জীব চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা’ বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে আশির দশকের প্রথম থেকেই সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত হন। ‘ভোরের কাগজ’, ‘আজকের কাগজ’, ‘যায়যায়দিন’সহ দেশের স্বনামধন্য সব দৈনিক পত্রিকার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। দেশের প্রধান দৈনিকগুলোয় ফিচার বিভাগ চালুকরণে সঞ্জীব চৌধুরীর অবদান অনস্বীকার্য।

শিল্প সাহিত্যের মানুষ হয়েও তিনি ছিলেন আপাদমস্তক রাজনৈতিক। স্কুল-কলেজ থেকেই রাজনীতির সংস্পর্শে আসা সঞ্জীব চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নেতৃত্বে গড়ে উঠে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক সংগঠন। ৯০’ এর স্বৈরাচার আন্দোলনে কবিতা আর বক্তৃতায় রাজপথ কাঁপিয়েছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী শিল্পী সঞ্জীব চৌধুরী নব্বই এর আন্দোলনে গলায় হারমোনিয়াম নিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তাৎক্ষণিক গান লিখে, তাতে তখনই সুর বসিয়ে গাইতেন স্বৈরাচার পতনের গান।

ছোটবেলায় হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন ও এরপরে ঢাকার বকশী বাজার নবকুমার ইন্সটিটিউটে নবম শ্রেণীতে এসে ভর্তি হন ও এখান থেকে ১৯৭৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১২তম স্থান অর্জন করেন। ১৯৮০ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও মেধা তালিকায় স্থান করে নেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে ভর্তি হন কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা শেষ না করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.