‘সাইমনের হঠাৎ প্রতিবাদী হওয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। শনিবার (২০ জানুয়ারি) সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বরাবর লিখিত অব্যাহতি পত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

পদত্যাগের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন না ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বললেন, ‘বর্তমান সমিতির মেয়াদই তো শেষের পথে। আগামী মাসে নির্বাচন। শেষ সময় এসে অব্যাহতি চাওয়ার কী আছে!’

এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও মনে করেন তিনি।

অব্যাহতি পত্রে সাইমন লিখেছেন, ‘বিগত দিনগুলোতে আমি আমার দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ নিবেদিত ছিলাম। কিন্তু সম্প্রতি সমিতির নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত ও নীতির সঙ্গে আমি একমত হতে পারছি না। বিশেষ করে সাফটা চুক্তিতে বিদেশি ভাষার সিনেমা আমদানি করে দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্পকে হুমকিতে ফেলে বিদেশি সিনেমা মুক্তির প্রেক্ষিতে উদ্ভুত বিতর্কিত পরিস্থিতিতে সমিতির কার্যকরী পরিষদের নিষ্ক্রিয়তা আমার কাছে সমর্থনযোগ্য নয়।’

পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকে সাইমন বলেন, আমার অভিনীত ‘শেষ বাজি’ চলচ্চিত্রটি গত ১৯ জানুয়ারি মুক্তি পায়। একই দিনে নিয়মনীতি না মেনে বিদেশি আর একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে এবং আমাদের অধিকাংশ সিনেমা হলে প্রদর্শিত হয়েছে। এ কারণে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প এবং আমার ক্যারিয়ার যথেষ্ট ক্ষতি হলো। কিন্তু অত্যন্ত হতাশার বিষয় এ সম্পর্কেও আমাদের সমিতি নীরব রয়েছে। এ সব বিষয় নিয়ে মত পার্থক্য থাকায় সমিতির কার্যকরী কমিটিতে থাকা আমি অযৌক্তিক এবং অনুচিত মনে করছি। তাই সহ-সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি চাইছি।

তিনি আরও বলেন, অবাক হই বার বার এটা ভেবে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সকল ক্ষেত্রে আমরা স্বনির্ভর হবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু চলচ্চিত্র শিল্পে ক্রমাগত পরনির্ভরশীল হচ্ছি। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান রইল। আমি অতীতের মতোই দেশীয় চলচ্চিত্র বিকাশের পক্ষে কাজ করে যাবো।

সাইমনের অভিযোগগুলোর প্রসঙ্গে সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সাইমনও তো এই কমিটির গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা। যেসব বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন, সেগুলোতে তো কখনও কমিটির মিটিংয়ে বসে বলেননি! কখনও উপস্থাপনও করেননি। শেষ মুহূর্তে এসে কেন এভাবে কথাগুলো বললেন?

তিনি আরও বলেন, আমার তো মনে হয়, আমদানি ছবির সঙ্গে তার ছবি মুক্তি পেয়েছে বলেই হঠাৎ প্রতিবাদী হয়ে উঠেছেন তিনি। না হলে আগে কেন তিনি এ বিষয়ে সোচ্চার হলেন না। তিনিও তো গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা, কেন নিষ্ক্রিয় ছিলেন!

প্রসঙ্গত, ভারতীয় ছবি আমদানি দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল। তবে গেলো বছরের মে মাসে বলিউড তারকা শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ দিয়ে হিন্দি ছবির দুয়ারও খুলে যায় এ দেশে। এরপর থেকে ‘জওয়ান’, ‘অ্যানিমেল’, ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’ হিন্দি ছবিগুলো মুক্তি পেয়েছে।

গত ১৯ জানুয়ারি মুক্তি পায় তিনটি চলচ্চিত্র—হুব্বা, শেষ বাজি, কাগজের বউ। নিয়ম অনুযায়ী দেশীয় ছবি দুটি মুক্তি পেলে আমদানি করা সিনেমা পর্দায় আসবে না। তবে শেষ অবধি মোশাররফ করিম অভিনীত ভারতীয় ছবি হুব্বা মুক্তি পায়। যা সিনেমা হলও পেয়েছে সর্বাধিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.