স্ত্রীর কবরের পাশে শায়িত হবেন সোহান

প্রখ্যাত নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মারা গেছেন। তাকে তার প্রয়াত স্ত্রীর কবরের পাশে কবর দেওয়া হবে। এমনটাই জানিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহীন সুমন বলেন, উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালের পাশের এক মসজিদে তার মরদেহের গোসল করানো হয়েছে। এ মুহূর্তে মরদেহ ফ্রিজিং ভ্যানে রাখা হয়েছে। তার শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী তাকে টাঙ্গাইলে তার স্ত্রীর কবরের পাশে দাফন করা হবে।

তার স্ত্রী মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) মারা যান। তাকে দাফন করে বুধবার সকালে উত্তরায় বাসায় ফিরেন এ খ্যাতিমান নির্মাতা। ফেরার পর কাছের মানুষদের বলেছিলেন, স্ত্রীর কবরের পাশে যেন তার কবরের জায়গা দেখা হয়। তার শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী তাকে সেখানেই কবর দেওয়া হবে।

রীতি অনুযায়ী চলচ্চিত্রের সূতিকাগার এফডিসিতে সোহানুর রহমান সোহানের মরদেহ তার সহকর্মীদের শেষবারের মত শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হবে কিনা, এ ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ বলেন, আমরা তো চাচ্ছি তার মরদেহ এফডিসিতে নিয়ে যেতে। কিন্তু তার পরিবার চাচ্ছে এখনই টাঙ্গাইল নিয়ে যেতে। এরপরও আমরা তাদের সঙ্গে এখন বসবো (রাত সাড়ে ৯টা) বসবো। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে তার মরদেহ এফডিসিতে নিয়ে যাওয়ার।

উল্লেখ্য, সোহানুর রহমান সোহান তিন কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন।

১৯৭৭ সালে সোহানুর রহমান সোহান তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন আরেক বিখ্যাত পরিচালক শিবলী সাদিকের সহকারী হিসেবে। ১৯৮৮ সালে ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’ দিয়ে নির্মাতা হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। এছাড়া এজে মিন্টু, শহীদুল হক খানেরও সহকারী ছিলেন। ১৯৯৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ তাকে পরিচালক হিসেবে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। এ ছবিতে অভিষেক হয় সুপারস্টার সালমান শাহ ও মৌসুমীর। তার হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছে হালের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান, ডন, শাকিল খানসহ অনেক অভিনেতা ও কলাকুশলীর।

দুডজনেরও বেশি ছবি পরিচালনা করেছিলেন সোহান। এগুলো হচ্ছে─ বিশ্বাস অবিশ্বাস, বেনাম বাদশা, কেয়ামত থেকে কেয়ামত, আখেরি রাস্তা, বিদ্রোহী কন্যা, স্বজন, আমার ঘর আমার বেহেশত, আমার দেশ আমার প্রেম, মা যখন বিচারক, অনন্ত ভালবাসা, কিলার, সত্যের বিজয়, স্বামী ছিনতাই, বলো না ভালোবাসি, বৃষ্টি ভেজা আকাশ, কথা দাও সাথী হবে, আমার জান আমার প্রাণ, পরাণ যায় জ্বলিয়া রে, কোটি টাকার প্রেম, দ্যা স্পিড, সে আমার মন কেড়েছে, এক মন এক প্রাণ, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু।

সোহানু রহমান সোহান বেশ কয়েকবার চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালে কাফন কাপড় পরে হিন্দি ছবি আমদানির বিরুদ্ধে হওয়া আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সবশেষ ২০২১-২৩ মেয়াদে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ছিলেন তিনি। বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.