পান্থপথ থেকে আনোয়ার হোসেনের মরদেহ উদ্ধার

আন্তর্জাতিকখ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রী আনোয়ার হোসেনে মারা গিয়েছেন। আজ শনিবার সকালে পুলিশ পান্থপথের ওলিও ড্রিম হেভেন হোটলের কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন।

ফোনিক্স ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট সৈয়দ সাখাওয়াত কামাল গণমাধ্যমকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আনোয়ার হোসেন ‘বাংলাদেশ ইন্টারন্যশলান স্যালন-২০১৮’র জুড়ি হিসেবে ফ্রান্স থেকে গত ২৩ নভেম্বর ঢাকায় আসেন। এরইমধ্যে এর কার্যক্রম শেষ হয়ে গিয়েছিলো। কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি থাকায় ওই ক্লাবের কয়েকজন শনিবার সকাল ৭টার দিকে উনার সঙ্গে দেখা করতে হোটেলে যায়। তার কক্ষের বাইরে থেকে অনেক ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে তার পুলিশের শরণাপন্ন হন। পুলিশ এসে তাকে মৃত উদ্ধার করে।

শেরেবাংলানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ ঘটনায় বলেন, ‘খবর পেয়ে শনিবার সকাল ১১টার দিকে পান্থপথের হোটেল ওলিও ড্রিম হেভেনে যায়। হোটেলের ৮০৯ নম্বর কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বিছানায় আনোয়ার হোসেনের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখি। তার শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে মরদেহের পাশ থেকে কিছু ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে।’

আনোয়ার হোসেনের লাশ বর্তমানে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে তার মৃত্যুর কারণ।

১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ৬ অক্টোবর পুরোন ঢাকার আগানবাব দেউড়িতে আনোয়ার হোসেনের জন্ম। তার বাবা কাজ করতেন সিনেমা অফিসে। শৈশবে তিনি দারিদ্র্যের মধ্যে অধ্যায়ন চালিয়ে যান। মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর নটরডেম কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭৪ সালে চলচ্চিত্রের চিত্রগহণের উপর উচ্চতর শিক্ষার জন্য ভারতের পুনা ফিল্ম ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন।

১৯৬৭ সালে মাত্র দুই ডলার (সমমান ৩০ টাকা) দিয়ে কেনা প্রথম ক্যামেরা দিয়ে তার আলোকচিত্রী জীবনের শুরু। প্রথম সাত বছর ধার করা ক্যামেরা আর চলচ্চিত্রের ধার করা ফিল্ম দিয়ে তিনি কাজ করেন। ঐ ফিল্মগুলো ছিলো সাদাকালো। তিনি ৩৬ টাকা ব্যয়ে রঙিন ছবি তোলা শুরু করেন ১৯৬৯ সালে। পরবর্তি ২০ বছর আলোকচিত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আবিষ্কারের চেষ্টা করেছেন।

খ্যাতিমান এ ব্যক্তিত্ব ‘সূর্যদীঘল বাড়ী’, ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’,‘পুরস্কার’, ‘অন্য জীবন’ এবং ‘লালসালু’র জন্য শ্রেষ্ঠ সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। এছাড়া পেয়েছেন অসংখ্য দেশি-বিদেশি সম্মাননা ও পুরস্কার।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.